Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
কৃষক আবু তালেব এর সফলতার গল্প
ডাউনলোড

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা গ্রামের কৃষক আবু তালেব, পিতাঃ গফুর শেখ। কৃসক আবু তালেব বংশ পরস্পরায় কৃষি কাজের সাতে জড়িত।

 গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কৃষকপর্যায়ে উন্নতমানের ডাল,তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ ৩য় পর্যায় (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের মাধ্যমে এসএমই কৃষক নির্বাচন করা হয়। ক্ষুদ্র ও মাঝারী বীজ উৎপাদন উদ্যেক্তা হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয়। তিনি এই প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং তার পরিবারের অন্য সদস্য্যও প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। কিভাবে বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ করা হয় সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর পর থেকেই তার জীবন মানের উন্নয়ন শুরু হয়। প্রথমে তিনি উক্ত প্রকল্প থেকে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন ৬ বিঘা প্রদর্শনী পান। তিনি যত্ন করে সফলভাবে প্রদর্শনীটি বাস্তবায়ন করে প্রদর্শনী থেকে বিঘা প্রতি ৬০ কেজি হারে মোট ৩৬০ কেজি বীজ পান এবং সম্পূর্ণ বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করেন। প্রতি কেজি বীজ ৬০০০/- টাকা করে বিক্রয় করে মোট ২১,৬০,০০০/- (একুশ লক্ষ ষাট হাজার টাকা) আয় করেন। উক্ত বছরে খেসারীর ৩ বিঘা প্রদর্শনী পান। তিনি যত্ন করে সফলভাবে প্রদর্শনীটি বাস্তবায়ন করে প্রদর্শনী থেকে বিঘা প্রতি ২৮০ কেজি হারে মোট ৮৪০ কেজি বীজ পান এবং সম্পূর্ণ বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করেন। প্রতি কেজি বীজ ৭০/- টাকা করে বিক্রয় করে মোট ৫৮,৮০০/- (আটান্ন হাজার আট শত টাকা) আয় করেন। উক্ত বছরে মাসকলাইর ৩ বিঘা প্রদর্শনী পান। তিনি যত্ন করে সফলভাবে প্রদর্শনীটি বাস্তবায়ন করে প্রদর্শনী থেকে বিঘা প্রতি ১২০ কেজি হারে মোট ৩৬০ কেজি বীজ পান এবং সম্পূর্ণ বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করেন। প্রতি কেজি বীজ ১০০/- টাকা করে বিক্রয় করে মোট ৩৬০০০/- (ছত্রিশ হাজার টাকা) আয় করেন। উক্ত বছরে মসুরের ৩ বিঘা প্রদর্শনী পান। তিনি যত্ন করে সফলভাবে প্রদর্শনীটি বাস্তবায়ন করে প্রদর্শনী থেকে বিঘা প্রতি ৩২০ কেজি বীজ হারে মোট ৯৬০ কেজি বীজ পান এবং সম্পূর্ণ বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করেন। প্রতি কেজি বীজ ১০০/- টাকা করে বিক্রয় করে মোট ৯৬০০০/- (ছিয়ানব্বই হাজার টাকা) আয় করেন। উক্ত বছরে তিলের ৩ বিঘা প্রদর্শনী পান। তিনি যত্ন করে সফলভাবে প্রদর্শনীটি বাস্তবায়ন করে প্রদর্শনী থেকে বিঘা প্রতি ২৪০ কেজি বীজ হারে মোট ৭২০ কেজি বীজ পান এবং সম্পূর্ণ বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করেন। প্রতি কেজি বীজ ১০০/- টাকা করে বিক্রয় করে মোট ৭২০০০/- (বাহাত্তর হাজার টাকা) আয় করেন। ২০২০-২১ অর্থ বছরে পাট ১ বিঘা প্রদর্শনী পান। তিনি যত্ন করে সফলভাবে প্রদর্শনীটি বাস্তবায়ন করে প্রদর্শনী থেকে ১ বিঘায় ৩০ কেজি বীজ পান। প্রতি কেজি বীজ ২৫০/- টাকা করে বিক্রয় করে মোট ৭৫০০/- (সাত হাজার পাঁচ শত টাকা) আয় করেন। ২০২০-২১ অর্থ বছরে সরিষা ৩ বিঘা প্রদর্শনী পান। তিনি যত্ন করে সফলভাবে প্রদর্শনীটি বাস্তবায়ন করে প্রদর্শনী থেকে  বিঘা প্রতি ২৪০ কেজি বীজ পান। মোট ৭২০ কেজি বীজ সংরক্ষিত আছে। ২০২০-২১ অর্থ বছরে পেঁয়াজ ৬ বিঘা প্রদর্শনী পান এবং ব্যাক্তিগত ভাবে ৫ বিঘা মোট ১১ বিঘা মাঠে বিদ্যমান আছে। নিজ উদ্যেগে কালোজিরা ৩ বিঘা জমিতে বীজ উৎপাদন করেন। তিনি যত্ন করে সফলভাবে বাস্তবায়ন করে প্রদর্শনী থেকে  বিঘা প্রতি ৯০ কেজি বীজ পান। মোট ২৭০ কেজি বীজ সংরক্ষিত আছে। নিজ উদ্যেগে ধনিয়া ২ বিঘা জমিতে বীজ উৎপাদন করেন। তিনি যত্ন করে সফলভাবে বাস্তবায়ন করে প্রদর্শনী থেকে  বিঘা প্রতি ২৩০ কেজি বীজ পান। মোট ৪৬০ কেজি বীজ সংরক্ষিত আছে।

তিনি এ যাবৎকাল প্রকল্প থেকে মৌসুম ভিত্তিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ, বীজ প্যাকিং যন্ত্র, বীজ প্যাকিং প্যাকেট চালনা, ডিজিটাল পরিমাপক যন্ত্র সরবরাহ পেয়েছেন এবং বীজ ব্যবসায়ী হিসেবে লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেছেন। তিনি নিরলসভাবে কৃষি কাজে পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলেছেন। তার এই অভতপূর্ব সাফল্য দেখে জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন এসএমই কৃষকের মোটিভেশন টুরে এসে কৃষকের এ সফলতা দেখে খুবই খুশি হয়ে অনেক কৃষক উদ্যেক্তা হতে চেয়েছেন এবং এলাকার অন্যান্য কৃষক তাকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করে কৃষি কাজে ঝুঁকছেন।

তার বীজ উৎপাদন কলাকৌশল, বীজের মান ভাল ও অঙ্কুরোদগম হার প্রায় ৯৫% হওয়ায় গ্রামের কৃষকরা তার কাছ থেকে বীজ কিনতে আগ্রহী হন। তার এই কলাকৌশল অনুসরণ করে গ্রামের অন্য কৃষকরাও উৎপাদিত বীজ সংরক্ষণ করেছেন। তিনি এখন একজন সফল উদ্যেক্তা।

গত ১০/০৩/২০২১ খ্রিঃ তারিখে উপপরিচালক, কুষ্টিয়া, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা (ডিটিও), অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কুষ্টিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার কুমারখালী ও উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার কুমারখালী, কুষ্টিয়া, স্থানীয় চেয়ারম্যান, কৃষক প্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ তার রবি ২০২০-২১ মৌসুমের পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন ব্লক প্রদর্শনীর মাঠ দিবস ও রিভিউ ডিসকাশন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও মাঠ পরিদর্শন করেন। তাঁকে পেঁয়াজ বীজ বাজারজাত করনে সার্বিক সহযোগীতা করার জন্য উপ পরিচালক মহোদয় সকলকে অনুরোধ করেন। তিনি ডাল তেল ও মসলা ফসলের বীজ উৎপাদন কলা কৌশল, সংরক্ষণ, প্যাকিং ও বিপণন পদ্ধতি বিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহন করে বীজ ব্যবসায়ী উদ্যেক্তা হতে পেরে তার ফসল আবাদের আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।